সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ , ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে অগ্রগতি বিষয়ে মতবিনিময় দেখার হাওরের বড়দৈ কাষ্ঠগঙ্গা বিল শুকিয়ে মাছ শিকার শান্তিগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, আহত ৫ হাফভাড়া নিয়ে বাকবিতন্ডা, সুবিপ্রবি শিক্ষার্থী আহত, সড়ক অবরোধ সিলেটে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ পুনঃস্থাপনসহ ৩০ দফা দাবিতে স্মারকলিপি সভাপতি মেহেদী হাসান, সম্পাদক তামিম রায়হান এফআইভিডিবি’র উদ্যোগে খাদ্য অধিকার নেটওয়ার্ক সভা মুক্তি ও স্পার্টাকাসের স্বপ্নময় পৃথিবী বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস পালিত পাগনার হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নিলেন জেলা প্রশাসক জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন জুলাই স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন দেড় হাজার একর জমি অনাবাদীর আশঙ্কা নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে : জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ শিল্প-পণ্য বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন সালেহা খাতুন কুরশী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন বার্ষিক বিচার বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত নাব্য সংকটে পাটলাই নদীতে নৌজট পাউবো’র কর্মকর্তাদের সরেজমিন বাঁধের কাজ তদারকিতে থাকতে হবে : জেলা প্রশাসক জগন্নাথপুর পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৪

আর্থসামাজিক ব্যবস্থাটাই বদলে দিন

  • আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৪ ০১:০৪:১১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৪ ০১:০৫:০৯ পূর্বাহ্ন
আর্থসামাজিক ব্যবস্থাটাই বদলে দিন
একটি স্থানীয় দৈনিকের (সুনামগঞ্জের খবর, ২২ অক্টোবর ২০২৪) পাতা থেকে সুনামগঞ্জের বালুপাথর মহাল ধোপাজানে আজকাল কী চলছে তার একটি বিবরণ নিম্নে তোলে দিলাম। সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘মাসে ২০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি’। শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীর প্রবেশমুখে প্রশাসনের দেওয়া বাঁশের আড় উপরে ফেলে বালু-পাথর আনা-নেওয়া করছে বালুখেকোরা। সুনামগঞ্জের বড় বালু-পাথর মহাল ধোপাজানে রবিবার বিকালে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মহালে বৈধভাবে উত্তোলন বন্ধ থাকলেও অবৈধভাবে দিনে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়শ বারকী নৌকা-বাল্কহেড বালু-পাথর উত্তোলন করে বহাল তবিয়তে বের হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। চলছে শত শত বোমা মেশিন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিআইডব্লিউটিএ, সুনামগঞ্জ পৌরসভা, গৌরারং ও সুরমা ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন নামে টোল আদায়ের নামে চলছে চাঁদাবাজি। বালু-পাথর ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ জানালেন, দিনে ছোট বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ৫০০ নৌকা বের হয় মহাল থেকে। বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নামে আদায় হয় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। মাসে ২০ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে এখানে।’ এরপরে সম্পাদকীয়তে আর কী বলার থাকে? বিগত ৬ বছর ধরে এই মহালটি ইজারাবহির্ভূত অবস্থায় আছে। কিন্তু এক দিনের জন্যও বোধ করি বালু উত্তোলন বন্ধ হয় নি। বিভিন্ন কৌশলে বালুপাথরখেকো সিন্ডিকেট মহালটি থেকে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে বালুপাথর লুট করেই চলেছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘সুনামগঞ্জের বড় পাথর মিশ্রিত বালু মহাল ধোপাজান। গেল প্রায় ছয় বছর হয় এই মহালটি ইজারাবিহীন। বড় এই মহালটি একেক সময় একেক পন্থায় লুটপাট হয়। কোন সময় জব্দ বালু-পাথর নিলাম নিয়ে এই বালু পাথর বহনের বৈধতা দেখিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট বালু-পাথর উত্তোলন করা হয়। কখনো ড্রেজার মেশিন দিয়ে, কিংবা হাতের যন্ত্র দিয়ে শত শত নৌকায় বালু-পাথর উত্তোলন করে এই লুটপাট চলে। সম্প্রতি ওখানে বালু লুটপাট এবং চাঁদাবাজি বেড়েছে। ডলুরা জিরোপয়েন্ট থেকে ডলুরা মসজিদের ঘাট পর্যন্ত এলাকায় দিনে-রাতে চলছে বালু লুটপাট। নদীর কাইয়ারগাঁও এলাকায় রাতে ড্রেজার মেশিনে নদীর বুক খনন চলছে। তাতে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে।’ অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে উত্তোলন ও বিক্রয় করা এসব বালু-পাথরের টাকার ভাগ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কিছু রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তারা পেতেন। এখনো এভাবেই চলছে, কেবল মানুষ বদলেছে, কিছু সাংবাদিক নামের চাঁদাবাজ প্রায় প্রতিদিন গিয়ে ওখানে হাত পাতে। আটক নৌকা ছাড়ানোর চেষ্টা করে। একটি নৌকা ছাড়াতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লেনদেন হয়। টাকা নিয়ে পুলিশের কাছ নৌকা ছাড়ানোর তদবির করে এরা।’ আমরা মনে করি এইভাবে সমাজের অধিপতি শ্রেণির দুর্নীতিবাজ অংশ সিন্ডিকেট গড়ে তোলে মহালে কেবল নয়, গুটা আর্থসামাজিক ব্যবস্থাটাকেই লুটপাটের অভয়ারণ্য বানিয়ে ফেলেছে। তারা কেউ রাজনীতিবিদ, কেউ আমলা, কেউ সাংবাদিক, কেউ সমাজসেবী, কেউ ধনকুবের প্রমুখ পৌরসমাজের এইসব চাঁইরা মিলে এই লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছেন। প-িতেরা বলেন, যে-কোন অধিপতি শ্রেণির আধিপত্যের উৎপাদন ও পুনরোৎপাদনের বড় শর্ত হিসেবে থাকে সমস্বােের্থর সামাজিক শক্তিসমূহের সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক মোর্চা গঠনের সফলতার বিষয়টি। দেশীয় পরিসরে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর এই মোর্চা এমনকি বৈশি^ক পরিসরেও আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়। আর এখানে তারা একটি বালুমহালের পরিসরে তাদের আধিপত্যকে কায়েম করেছেন মাত্র। এটা একটা মামুলি ব্যাপার। সমাজের সুবুদ্ধিসম্পন্ন দুয়েকজন এই আর্থসামাজিক মোর্চার রাজনীতির বিরোধিতা করতেই পারেন। এমন বিরোধিতাকারি হতে পারেন তিনি একজন জেলা প্রশাসক, কিন্তু তাতে এই ঐতিহাসিক মোর্চার কীছু যায় আসে না। তারা তাকে ম্যানেজ করবে, ম্যানেজ করতে না পারলে বদলি করে দেবেন অন্যত্র। কিংবা একজন সাধারণ প্রতিবাদীকে ম্যানেজ করবেন অন্য কোনও খতরনাক পদ্ধতিতে। উপসংহারে আমরা কেবল বলতে পারি, এই ঐতিহাসিক মোর্চা নামক সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে বর্তমান আর্থসামাজিক ব্যবস্থাটাই বদলে দিতে হবে। বদলে দেওয়ার পর সমাজপতিদের শ্রেণিস্বার্থ রক্ষার্থে এই ঐতিহাসিক মোর্চা গঠনের কোনওরূপ সামাজিক, রাজনীতিক ও আর্থনীতিক পরিসর-প্রয়োজনীয়তা যদি না থাকে তবেই এইধরণের সিন্ডিকেট থেকে সমাজ মুক্তি পেতে পারে, অন্যথায় নয়।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স